বগুড়ার কাহালুতে ‘যুবককে হত্যার পর মাটিতে পুঁতে রেখেছিল’

বগুড়ার কাহালুতে ‘যুবককে হত্যার পর মাটিতে পুঁতে রেখেছিল’

বগুড়ার কাহালুতে ‘যুবককে হত্যার পর মাটিতে পুঁতে রেখেছিল’
বগুড়ার কাহালুতে ‘যুবককে হত্যার পর মাটিতে পুঁতে রেখেছিল’

বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার কাহালুতে দুই মাস আগে নিখোঁজ হওয়া বিধান চন্দ্র সরকার নামে এক যুবকের গলিত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এর আগে নিখোঁজের নেপথ্যে থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে উদ্ধার হওয়া মরদেহটি বিধানের কিনা তা নিশ্চিত হতে পুলিশ ডিএনএ টেস্ট করবে। শুক্রবার দুপুরে কাহালু উপজেলার শিবা কলমা গ্রাম থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

বিধান চন্দ্র সরকার (২০) কাহালুর শিবা কলমা গ্রামের অনীল চন্দ্র সরকারের ছেলে এবং কীর্ত্তন গায়ক। গত ১২ এপ্রিল তার বাবা কাহালু থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

গ্রেপ্তার তিন জন হলেন, শ্রী বিপুল চন্দ্র প্রাং (৩৫), শ্রী দিনেশ চন্দ্র প্রাং (৪১), শ্রী উৎপল চন্দ্র (২৪)। তারা সবাই শিবা কলমা গ্রামের বাসিন্দা এবং দিনমজুরের কাজ করেন।

বৃহস্পতিবার রাতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও কাহালু থানা পুলিশ যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করে। বিধানের নিখোঁজের দেড় মাস পর গত ১ জুন বাবা অনীল চন্দ্রের কাছে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানান। এরপর তদন্তে নেমে পুলিশ ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

ডিবির ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিষয় নিশ্চিত করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা বিধানের পূর্ব পরিচিত। বিধানের বাবার কাছ থেকে টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে আটক করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনামত বিধানকে নিয়ে শিবাকলমা গ্রামের পূর্বে ভাদাইখাল এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তারা একসাথে মদপানও করেন।

মদপানে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়লে দিনেশ পেছন থেকে বিধানের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। বিধান মাটিতে পড়ে গেলে উৎপল তার কাছে থাকা হাতুড়ি দিয়ে বিধানকে আঘাত করে।

পুলিশ জানায়, তাদের পরিকল্পনা ছিল বিধানকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে অজ্ঞান করে ফেলা। কিন্তু আঘাত গুরুতর হওয়ায় তারা তাৎক্ষনিকভাবে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।এ জন্য অভিযুক্তরা বিধানের মাথা পানিতে চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তারা মাটি খুড়ে মরদেহ লুকিয়ে ফেলেন।

এ ঘটনার পরের দিন সকালে বিপুল মরদেহের অবস্থা জানার জন্য ওই স্থানে গেলে দেখতে পায় মাটির ভিতর থেকে একটি হাত বেরিয়ে আছে। পরে সেই হাত আবার মাটি খুড়ে ঢেকে দেয় বিপুল। এর কয়েক দিন পর মরদেহটি ভালোভাবে গুম করার জন্য সেখান থেকে তুলে আরেক স্থানে কবর খুড়ে লুকিয়ে রাখেন অভিযুক্তরা।

ডিবির ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, দেড় মাস পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে গ্রেপ্তার তিন জন বিধানের বাবা অনীলের কাছে মোবাইল ফোনে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করতে শুরু করে। বিষয়টি জানার পর থেকে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহেযোগিতা নিয়ে তাদের শনাক্ত করে। পরে যৌথ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে ওই তিনজনকে।

মরদেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেয়া তথ্যে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তারপরও আমরা অধিক নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ টেস্ট করবো। আর হত্যার মূল কারণ জানার জন্য গ্রেপ্তারদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply